বাইতুল হিকমাহ (Bayt al-Hikma) হচ্ছে একটি মধ্যযুগীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা বর্তমান ইরাকের বাগদাদে অবস্থিত ছিল। এটি ৮ম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফা হারুন আল রশিদ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তার ছেলে আল মামুনের শাসনামলে এর সর্বোচ্চ উন্নতি ঘটে। নিচে এর কিছু বিশদ বিবরণ দেওয়া হলঃ
- প্রতিষ্ঠা: বাইতুল হিকমাহকে প্রাথমিকভাবে একটি সংগ্রহশালা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল, যা পরবর্তীতে একটি বৃহৎ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়।
- দর্শন ও বিজ্ঞান: এখানে তৎকালীন গ্রিক, ফারসি, ভারতীয় এবং অন্যান্য সভ্যতার গুরুত্বপূর্ণ বইগুলোর অনুবাদ ও সংরক্ষণ করা হয়েছিল। এটি দর্শন, বিজ্ঞান, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল।
- পরিচালনা: বাইতুল হিকমাহর নেতৃত্বে ছিলেন বিখ্যাত পণ্ডিত আল-কিন্দি। এছাড়াও, আল-খাওয়ারিজমি, যিনি বিখ্যাত গণিতবিদ, এখানে কাজ করেছেন।
- উপস্থিতি: বাইতুল হিকমাহর লেখাপড়া এবং গবেষণার জন্য সারা বিশ্ব থেকে পণ্ডিতরা আসতেন এবং এটি জ্ঞানের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।
- প্রভাব: এর মাধ্যমে মধ্যযুগীয় ইসলামী সভ্যতায় উল্লেখযোগ্য বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক অগ্রগতি হয় এবং পরবর্তীতে ইউরোপীয় রেনেসাঁতেও প্রভাব ফেলেছিল।
- বিনাশ: মঙ্গোল আক্রমণের সময় ১২৫৮ সালে হাসপাতাল ধ্বংস হয়েছিল, যদিও এর তত্ত্বাবধানে থাকা অনেক বই পূর্বে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হয়েছিল।
এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় জ্ঞান সংরক্ষিত হয়ে পরবর্তীতে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল।